ভ্রমণ

কম খরচেই ঘুরে আসুন দার্জিলিং থেকে, জেনে নিন বিস্তারিত । WB Darjeeling Tour at a Very low cost

WB Darjeeling Tour at a Very low cost


আপনি কী কম খরচে কোনো মনোমুগ্ধকর জায়গায় বেড়াতে যেতে চাইছেন? তাহলে আর দেরী না করে চলে আসুন দার্জিলিং। দার্জিলিং পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র যেখানে প্রতিবছর বহু মানুষ ঘুরতে আসে। আজকের এই প্রতিবেদনে কীভাবে দার্জিলিং যাবেন, কোন কোন জায়গা ঘুরবেন ইত্যাদি সমস্ত রকম তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

• কীভাবে দার্জিলিং যাবেন?
দার্জিলিং যেতে হলে প্রথমে আপনাদের নিউ জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি স্টেশনে নামতে হবে। শিলিগুড়ি স্টেশন যাওয়ার জন্য কলকাতা, দিল্লী, মুম্বাই বড়ো বড়ো শহর থেকে সরাসরি ট্রেন রয়েছে। ট্রেনে করে শিলিগুড়ি আসার পরে সেখান থেকে সরকারি বাস ধরে দার্জিলিং এ যেতে পারেন। বর্তমানে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার সরকারি বাস ভাড়া মাত্র ১০৩ টাকা। এছাড়া আপনি প্রাইভেট গাড়িতে করেও মাথাপিছু ৪০০-৫০০ টাকা করে ভাড়া দিয়ে দার্জিলিং এ আসতে পারেন। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যেতে অন্তত তিন থেকে চার ঘন্টা লাগে।

• কোথাকার হোটেল নেওয়া ভালো হবে?
দার্জিলিং অত্যন্ত বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হওয়ায় এখানে বহু হোটেল রয়েছে। কিন্তু মেইন শহরের সামান্য ভেতরের দিকে হ্যাপি ভ্যালি গার্ডেনের ওখানে হোটেল নিলেই তা সবথেকে ভালো কাজ করবেন। এখানকার হোটেলগুলোর ভাড়াও কম, তারওপরে হোটেলরুমের জানলা দিয়ে পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের দৃশ্য দেখতে পারবেন।

• দার্জিলিং এ কোথায় কোথায় ঘুরবেন?
(১) রক গার্ডেন :- দার্জিলিং এ বহু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। আপনি দার্জিলিং এ এসে প্রথমে মূল শহর থেকে ৭-৮ কিমি দূরের রক গার্ডেনে আসতে পারেন। রক গার্ডেনে আসার সময়ে রাস্তার দু’ধারে সবুজে ভরা পাহাড়ের দৃশ্য দেখতে পাবেন। রক গার্ডেনে এসে আপনি একাধিক জলপ্রপাত (ঝর্না) দেখতে পাবেন। এছাড়াও সুবিশাল পাথর এবং সুন্দর পাহাড়ও দেখতে পাবেন। এখানে একটি সুন্দর পার্কও রয়েছে ও খাবারের জন্যও কিছু দোকান রয়েছে। সবমিলে রক গার্ডেনে ঘুরতে আসলে আপনি পরিবার কিংবা বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটাতে পারবেন।

(২) অরেঞ্জ ভ্যালি টি গার্ডেন :- রক গার্ডেনে যাবার রাস্তাতেই আপনি অরেঞ্জ ভ্যালি টি গার্ডেন দেখতে পাবেন। সুবিশাল সবুজময় চায়ের বাগান দেখে আপনি যেনো প্রকৃতির সৌন্দর্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন। এই চায়ের বাগানের আশেপাশে জলখাবারের দোকানও রয়েছে। সেখান থেকেও হালকা কিছু খেয়ে নিতে পারেন।

(৩) বাতাসিয়া লুপ :- বাতাসিয়া লুপ হলো দার্জিলিং এর আরও একটি বিখ্যাত জায়গা যেখানে একটি অসাধারণ পার্ক রয়েছে। এই পার্কের অন্যতম আকর্ষণ হলো  টয়ট্রেন। টয়ট্রেনটিতে উঠে আপনি পুরো পার্কটি ও তার আশেপাশের দৃশ্যগুলো দেখতে পাবেন। এছাড়াও এখানে দার্জিলিং এর স্থানীয় পোশাক পড়ে ছবি তোলারও ব্যবস্থা রয়েছে। এই পার্কে দূরবীনের মাধ্যমে পুরো দার্জিলিং এর মনোরম দৃশ্য দেখতে পাবেন। পার্কের প্রবেশমূল্য মাত্র ২০ টাকা। পার্কের পাশেই কেনাকাটা করার বাজার ও কিছু রেস্টুরেন্টও রয়েছে।

(৪) হ্যাপি ভ্যালি টি গার্ডেন :- হ্যাপি ভ্যালি টি গার্ডেন দার্জিলিং এর আরও একটি বিখ্যাত চা বাগান। এখানেও দূর দূর পর্যন্ত চা গাছ রয়েছে। এই চা বাগানগুলো থেকে বহু দেশে চা রপ্তানি করা হয়।

(৫) দার্জিলিং এর টয়ট্রেন :- দার্জিলিং রেলওয়ে স্টেশন থেকে আপনি টয়ট্রেনে উঠতে পারেন। মূলত এই JOYRIDE নামে পরিচিত টয়ট্রেনগুলোর মাধ্যমে দার্জিলিং থেকে ঘুম রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত যাত্রা করা যায়। উল্লেখ্য, ঘুম স্টেশন হলো বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলওয়ে স্টেশন। টিকিট অনলাইনে বুক করা যায় না। আপনাকে দার্জিলিং রেলওয়ে স্টেশনে এসে টিকিট কাটতে হবে।

(৬) চৌরাস্তা :- দার্জিলিং এর চৌরাস্তা আরও একটি জনপ্রিয় জায়গা যেখানে আপনি বিভিন্ন রকম মজা করতে পারবেন। এখানে এসে যেকোনো চায়ের রেস্টুরেন্টে গিয়ে দার্জিলিং এর বিশ্ববিখ্যাত চায়ের আনন্দ নিতে পারেন। এখানে শপিং করার জন্যও বহু দোকান রয়েছে।

(৭) টাইগার হিলস :- দার্জিলিং এ বেড়াতে আসলে টাইগার হিলস প্রত্যেকেরই যাওয়া উচিত। তবে টাইগার হিলস যেতে হলে হোটেল থেকে ৩-৪ টার দিকেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে। টাইগার হিলসে গিয়ে ভোরবেলার সূর্যোদয় দেখার অপরূপ দৃশ্য ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা।

(৮) সিমনা :- দার্জিলিং থেকে লেপচা জগত হয়ে সিমনাতে যেতে হয় যেখান থেকে আপনি নেপাল দেখতে পাবেন। এখানকার মোমো খুবই সুস্বাদু।

এছাড়া জোরপোখড়ি লেক, লেপচা কাঞ্চনঝঙ্গা ভিউ পয়েন্ট, দার্জিলিং এর চিড়িয়াখানা প্রভৃতি জায়গাতেও আপনি যেতে পারেন।

এইভাবেই আপনি দার্জিলিং এ এসে উপরোক্ত সমস্ত বিখ্যাত জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। দার্জিলিং এর অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য ও এখানকার স্থানীয় মানুষদের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে ফের এখানে আসতে আপনার ইচ্ছে করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button