সরকারি প্রকল্প

এখন ঘরে বসে হাতে পাবেন জমির পাট্টা, আবেদন প্রক্রিয়া জেনে নিন

রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী প্রতিটি সুবিধা যাতে সমগ্র রাজ্যের প্রয়োজনশীল মানুষেরা পেতে পারেন তার জন্য স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর তরফে ২১ শের বিধানসভা নির্বাচনের পর দুয়ারে সরকার কর্মসূচি কার্যকর করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত নির্দেশিকা অনুসারে ১ লা নভেম্বর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে এই দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে আর তা চলবে ৩০ শে নভেম্বর পর্যন্ত। তবে এখানেই শেষ নয়, রাজ্য সরকারের তরফে নাগরিকদের জানানো হয়েছে এই ক্যাম্পের মাধ্যমে যে আবেদনপত্রগুলি জমা পড়বে সেগুলি ৩১শে ডিসেম্বর অর্থাৎ বছর শেষের আগেই নিষ্পত্তি করা হবে।

তবে চলতি মাসের এই দুয়ারে সরকার কর্মসূচীর মাধ্যমে শুধুমাত্র কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, ঐক্যশ্রী কিংবা কৃষক বন্ধু, কিষাণ ক্রেডিট কার্ড, লক্ষ্মীর ভান্ডার, জয় জোহার, তপশিলি বন্ধু, মৎস্যজীবী ক্রেডিট কার্ড, খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, আধার কার্ডের জন্য আবেদন, আধার কার্ডের সংশোধন কিংবা আপডেট, জমির মিউটেশন সংক্রান্ত তথ্য, বিনামূল্য সামাজিক সুরক্ষা যোজনা, ওয়েবার ক্রেডিট কার্ড, স্বনির্ভর গোষ্ঠীরগুলির ক্রেডিট লিংক, জাতিগত শংসাপত্র অথবা প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেটের মত প্রকল্প, যোজনা কিংবা স্কলারশিপের জন্য আবেদনের করা সম্ভব, তা নয়।

এর পাশাপাশি রয়েছে পাট্টা সংক্রান্ত আবেদনের সুযোগও। কিন্তু আপনি কি জানেন পাট্টা সংক্রান্ত আবেদনের বিষয়ে কিভাবে আবেদন করতে হবে অথবা আবেদনের ক্ষেত্রে কি কি নথি প্রয়োজন হবে? যদি না জেনে থাকেন তবে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য।

যেহেতু দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে খাস জমির পাট্টার জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে, তাই রাজ্য সরকারের তরফে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে এবিষয়টি দেখাশোনা করার জন্য ভূমি সংস্কার দফতরের পাট্টা সংক্রান্ত আইন ও বিধি সর্ম্পকে ওয়াকিবহাল এরূপ আধিকারিকদের নিয়োগ করা হয়। এর পাশাপাশি আবেদনকারীদের ফর্মটি যাতে আইনমাফিক হয় তার দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। সুতরাং ফর্ম পূরণের সময় আপনাকেও বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।

ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রে আপনাকে যে ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে সেগুলি হলো:-
১. ফর্মটির একেবারে প্রথমের অংশে আপনাকে আপনার থানার নাম এবং জমা দেওয়ার তারিখ সঠিকভাবে লিখতে হবে।

২. এরপর আবেদনকারীর নাম, পিতা অথবা স্বামীর নাম, নিজস্ব জমির পরিমাণ সঠিকভাবে লিখতে হবে। নিজস্ব জমির পরিমাণ উল্লেখ করার ক্ষেত্রে মৌজা এবং জে.এল নম্বর, খতিয়ান নম্বর, শ্রেণী (আপনার জমিটি কোন ধরনের সেটা উল্লেখ করতে হবে), পরিমাণ সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে।

৩. আপনি যদি বর্গাদার হিসেবে জমিতে চাষ করে থাকেন তবে ‘বর্গাদার হিসেবে চাষকৃত জমির পরিমাণ’ এর অধীনে মৌজা এবং জে.এল নম্বর, খতিয়ান নম্বর এবং পরিমাণ সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

দুয়ারে সরকারে আবেদনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হলো এই দুটি নথি, কি কি নথি জেনে নিন এখনই

৪. এরপর পরিবারের জমির বিবরণ (নিজস্ব জমি সহ) এর অধীনে আপনার পরিবারের সদস্যদের এবং আপনার নিজস্ব জমির পরিমাণ সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ‘মালিকের নাম’ এর অধীনে আপনার পরিবারের যেসকল সদস্যের জমি রয়েছে তাদের নাম, এরপর ‘মৌজা এবং জে.এল নম্বর’ এর অধীনে কোন কোন মৌজায় তাদের জমি রয়েছে এবং সেই জমির জে.এল নম্বর উল্লেখ করতে হবে। এরপর আপনার পরিবারের সদস্যদের জমির দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, শ্রেণী এবং পরিমাণ সঠিকভাবে লিখতে হবে।

৫. যদি বর্গাদার হিসেবে আপনার পরিবারের সদস্যদের জমি থেকে থাকে তবে বর্গাদার হিসেবে কতো জমি রয়েছে সেটা সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে। যদি বর্গাদার হিসেবে জমি না থাকে তবে এই ঘরটিতে কোন কিছু লেখার প্রয়োজন নেই।

৬. এরপর আপনি যে খাস জমিটি দখল করে রেখেছেন সেই দখলীকৃত খাস সরকারি জমিটির মৌজা এবং জে.এল নম্বর, দাগ নম্বর, শ্রেণী এবং পরিমাণ সহ সমস্ত বিবরণ সঠিকভাবে লিখতে হবে। একাধিক খাস জমি যদি আপনি দখল করে থাকেন তবে সেই সমস্ত জমিগুলির বিবরণ লিখে দিতে হবে।

৭. এরপর আপনার মৌজার নাম এবং জে.এল নম্বর সঠিকভাবে লিখতে হবে এবং আপনি তপশিলি জাতি বা উপজাতিভুক্ত কিনা তা সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে। সবশেষে নির্দিষ্ট স্থানে আপনাকে একটি স্বাক্ষর করতে হবে। এরপর সাক্ষী রূপে আপনার এলাকায় বসবাসকারী লোকজনের স্বাক্ষর ওই ফর্মটিতে প্রদান করতে হবে।
উপরোক্ত পদ্ধতিতে আবেদন পত্রটি সঠিকভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথি সহকারে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে জমা দিলেই খাস জমির পাট্টার জন্য আপনার আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে। সমস্ত তথ্য এবং নথি ঠিক থাকলে আপনি যে খাস জমিটি দখল করে রয়েছেন সেটির পাট্টা আপনাকে রাজ্য সরকারের তরফে প্রদান করা হবে।

আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি কি কি?
১. আবেদনকারীর ভোটার কার্ড।
২. আবেদনকারীর আধার কার্ড।
৩. খাস জমি ছাড়া আবেদনকারীর অন্য কোনো জমি থাকলে সেই জমির রেকর্ড।
৪. খাস জমি ছাড়া বর্গাদার হিসেবে আবেদনকারীর কোন জমি থাকলে সেই জমির রেকর্ড।
৫. পরিবারের যেসকল সদস্যদের জমির তথ্য আপনি ফর্মে উল্লেখ করবেন তাদের জমির রেকর্ড।
৬. পরিবারের সদস্যদের বর্গাদার হিসেবে জমি থাকলে সেই জমির রেকর্ড।
৭. দখলিকৃত খাস জমির অনুরূপ নথি থাকলে সেই নথি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button